মোবাইল টাওয়ার থেকে কানে তরঙ্গ এসে পৌঁছার ভৌত ব্যাখ্যা — সমীকরণ, বাস্তবিক উদাহরণ ও নিরাপত্তা

মোবাইল টাওয়ার থেকে আপনার কানে কিভাবে রেডিও (ওয়ারলেস) তরঙ্গ আসে — তাত্ত্বিক সমীকরণ (χ(x)=A·sin(ωt−φ)), তরঙ্গের ধারণা, শক্তি ক্ষয়, উদাহরণ।

মোবাইল টাওয়ার থেকে কানে তরঙ্গ এসে পৌঁছার ভৌত ব্যাখ্যা — সমীকরণ, বাস্তব উদাহরণ ও নিরাপত্তা

সংক্ষিপ্ত বিবরণ: এই পোস্টে আমরা আলোচনা করব মোবাইল টাওয়ার থেকে কিভাবে রেডিও তরঙ্গ (wireless electromagnetic waves) ছেড়ে আপনার ফোন বা কানে পৌঁছে যায়; মৌলিক তরঙ্গ সমীকরণ ও পরিমিতি ব্যাখ্যা করবে, বাস্তব জীবনের উদাহরণ দেখাবে, ও নিরাপত্তা-সংক্রান্ত বিষয়গুলো পরিষ্কার করবে।

ভূমিকা — তরঙ্গ কি? তথ্যবহনের সাধারণ ছবি

প্রতিদিন আমরা অজানাই ফ্রিকোয়েন্সি-ভিত্তিক তরঙ্গের সাথে বাস করি — মোবাইল সিগনাল, ওয়াই-ফাই, রেডিও, টিভি। মোবাইল টাওয়ারগুলো হচ্ছে উচ্চতর-শক্তির অ্যান্টেনা যেগুলো রেডিও ফ্রিকোয়েন্সিতে (RF) সিগনাল প্রবাহিত করে। এই সিগনালগুলো ইলেকট্রোম্যাগনেটিক তরঙ্গ (EM waves) — এগুলো শূন্য মধ্য দিয়ে ভ্রমণ করে এবং আপনার ফোনের অ্যান্টেনায় পৌঁছালে তথ্য (ভয়েস বা ডেটা) পুনরুদ্ধার করা যায়।

তরঙ্গের মৌলিক পরিমিতিগুলো হল: আাম্প্লিটিউড (A), ফ্রিকোয়েন্সি (f) বা অ্যাঙ্গুলার ফ্রিকোয়েন্সি (ω), ফেজ (φ), এবং তরঙ্গদৈর্ঘ্য (λ)। এগুলোকে ব্যবহার করে একটি সরল সাইন-তরঙ্গ বোঝানো যায় — যা তথ্য বহনের একটি মৌলিক মডেল।

মোবাইল টাওয়ার থেকে কানে তরঙ্গ এসে পৌঁছার ভৌত ব্যাখ্যা .

মৌলিক সমীকরণ: সরল হারে তরঙ্গের মডেল

সবচেয়ে সহজ ও পরিচিত তরঙ্গের সমীকরণগুলোর একটি হ’ল সাইন তরঙ্গ:

χ(x, t) = A · sin(ωt − kx + φ)

এখানে —

  • χ(x, t) = অবস্থান x ও সময় t-এ তরঙ্গের মুহূর্তিক মান (field value)
  • A = অ্যাম্প্লিটিউড — তরঙ্গের সর্বোচ্চ মান (তরঙ্গের শক্তির অনুকূল সূচক)
  • ω = অ্যাঙ্গুলার ফ্রিকোয়েন্সি = 2πf (f হলো ফ্রিকোয়েন্সি)
  • k = তরঙ্গসংখ্যা (wave number) = 2π/λ
  • φ = প্রাথমিক ফেজ

অনেক সহজ উদাহরণে স্থানভিত্তিক অংশ (kx) আলাদা করে না দেখিয়ে আমরা সময়-নির্ভর রূপ লিখি:

χ(t) = A · sin(ωt − φ)

কিভাবে টাওয়ার থেকে তরঙ্গ ছড়ায় — পদক্ষেপভিত্তিক ব্যাখ্যা

  1. ট্রান্সমিশন (Transmission): টাওয়ারের অ্যান্টেনায় নির্দিষ্ট ফ্রিকোয়েন্সিতে (উদাহরণ: 900 MHz, 1800 MHz, 2100 MHz, 2600 MHz ইত্যাদি) বিদ্যুৎ সংকেত পাঠানো হয়। এই সংকেত ডিজিটাল তথ্য হিসেবে মোডুলেট করা থাকে (AM/PM এর অনুরূপ কিন্তু ডিজিটাল স্কিম: QPSK, QAM ইত্যাদি)।
  2. এম-ওয়েভ/আরএফ তরঙ্গের সৃষ্টি: অ্যান্টেনা থেকে ইলেকট্রোম্যাগনেটিক তরঙ্গ হিসেবে শক্তি ছেড়ে দেয়া হয় — এগুলো হল বায়ুতে প্রতিবার কুণ্ঠিত সাইন-মত তরঙ্গ।
  3. প্রকাশ ও বিস্তার (Propagation): তরঙ্গটি চারপাশে ছড়ায়; মুক্ত পরিবেশে দূরত্ব বাড়ার সাথে সাথে শক্তি কমে যায় (path loss)। শক্তি কমার হারের উপর নির্ভর করে সিগনালের শক্তি আপনার ফোনে কতটুকু পৌঁছায়।
  4. গ্রহণ (Reception): আপনার ফোন বা কান (অ্যাসাম্পশন: ফোনের অ্যান্টেনা) সেই তরঙ্গের অ্যাম্প্লিটিউড, ফেজ ও ফ্রিকোয়েন্সি পরিমাপ করে এবং ডিজিটাল ডিকোডিং করে মূল তথ্য (ভয়েস/ডেটা) পুনরুদ্ধার করে।

প্রচুর বাস্তবশাস্ত্র আছে — ছড়িয়ে পড়ার ধরন (Line-of-Sight, Refraction, Diffraction, Scattering) পরিবেশের ওপর নির্ভর করে বদলে যায় — শহর, গাছপালা, বাড়ি, মানুষ সবই তরঙ্গকে প্রতিফলিত বা শোষণ করে।

দূরত্ব ও শক্তি ক্ষয় — Path Loss (সহজ রূপ)

টাওয়ার থেকে কোনো নির্দিষ্ট দূরত্ব r-এ পৌঁছার সময় তরঙ্গের শক্তি সাধারণত distance squared নিয়ম (free-space) অনুযায়ী কমে যায়। সহজ ফর্মুলা হিসেবে:

Power_received ∝ Power_transmitted / r²

তবে বাস্তবে বিভিন্ন ফ্যাক্টর আসে — ফ্রিকোয়েন্সি, পরিবেশ (urban/rural), অ্যান্টেনা গেইন, বাধা (buildings, trees), ভূবৈজ্ঞানিক অবস্থা। রেডিও ইঞ্জিনিয়াররা সাধারণত নিচের মতো ফ্রি-স্পেস পাথ-লস ফর্মুলা ব্যবহার করে:

FSPL (dB) = 20·log10(d) + 20·log10(f) + 32.44

এখানে d = দূরত্ব (কিমি), f = ফ্রিকোয়েন্সি (MHz)। ফলাফল dB-তে দেয়। এটি বেসিক ধারণা দেয় যে কিভাবে দুরত্ব ও ফ্রিকোয়েন্সি বৃদ্ধি করলে সিগনাল কমে যায়।

ফ্রিকোয়েন্সি ও তরঙ্গদৈর্ঘ্যের সম্পর্ক

তরঙ্গদৈর্ঘ্য λ (মিটার) ও ফ্রিকোয়েন্সি f (Hz) এর সম্পর্ক:

λ = c / f

এখানে c ≈ 3×10⁸ m/s (আলো/তরঙ্গের গতিবেগ শূন্য মধ্যের জন্য)। উদাহরণ: 900 MHz (৯০০×10⁶ Hz) হলে λ ≈ 0.33 m। 1800 MHz হলে λ ≈ 0.166 m।

ছোট তরঙ্গদৈর্ঘ্য (উচ্চ ফ্রিকোয়েন্সি) বেশি আশপাশের শারীরক অবকাঠামো দ্বারা বাধাগ্রস্থ হয় (obstruction & penetration কমে), এবং বড় তরঙ্গদৈর্ঘ্য (কম ফ্রিকোয়েন্সি) কিছু ক্ষেত্রে বাধা পার হতে ভাল। তাই গ্রামাঞ্চলে কম ফ্রিকোয়েন্সি ব্যান্ড লাভবান; শহরে উচ্চ ব্যান্ড ব্যবহার করা হয় ক্যাপাসিটি বৃদ্ধির জন্য।

ফেজ (φ) কেন গুরুত্বপূর্ণ? ক্লকিং, ডিলেই ও মডুলেশন

ফেজ φ-র মাধ্যমে তরঙ্গের সময়িক স্থানচিত্র বদলে যায়। তথ্য বহনের কিছু পদ্ধতি (ফেজ-মডুলেশন — PM, QPSK ইত্যাদি) সরাসরি ফেজের পরিবর্তন ব্যবহার করে ডেটা এনকোড করে। এছাড়া, একই তরঙ্গ যদি প্রতিফলিত পথ দিয়ে আসে তাহলে ফেজ-ডিফারেন্স তৈরি করে ইন্টারফেরেন্স হতে পারে — ফলস্বরূপ চ্যানেলের শক্তি কমে বা বেড়ে যেতে পারে (ফেডিং)।

বাস্তব উদাহরণ (বাংলাদেশের পরিবেশে মিলিয়ে ব্যাখ্যা)

ধরা যাক: আপনার বাড়ি থেকে নিকটবর্তী মোবাইল টাওয়ার 500 মিটার দূরে অবস্থান করছে এবং টাওয়ারটি 1800 MHz ব্যান্ডে সিগনাল পাঠাচ্ছে। ছোট-সমীকরণ দিয়ে আমরা দেখি কেমন হবে:

  1. তরঙ্গদৈর্ঘ্য: λ = c / f ≈ 3×10⁸ / (1800×10⁶) = 0.1666 m ≈ 16.7 সেমি।
  2. সরল ফ্রি-স্পেস রেফারেন্স (আচরণ বোঝার জন্য): FSPL (dB) ≈ 20·log10(0.5) + 20·log10(1800) + 32.44 — (এখানে d=0.5 km) ফলে আপনি দেখতে পাবেন dB লস থাকবে; যা ট্রান্সমিশন পাওয়ারের উপর নির্ভর করে গ্রহণযোগ্য সিগনাল পেতে পারে।
  3. বাস্তব পরিবেশের প্রভাব: শহরে বাড়ি, পাখা, গাছপালা, বৃষ্টি এসব অতিরিক্ত লস যোগ করে। নগরের উচ্চ বহু-স্তরের বিল্ডিংগুলোর কারণে multipath এবং shadowing বাড়ে।

এগুলো ইঞ্জিনিয়ারিং ব্যাখ্যার সারাংশ — বাস্তবে নেটওয়ার্ক অপারেটররা টাওয়ার লোকে—আপনি স্মার্টফোনে বারবার 'নেটওয়ার্ক-স্ট্রেংথ' পরিবর্তন দেখতে পাবেন কারণ path loss, fading, handover, টাওয়ার সেল লোড ইত্যাদি সব মিলে কন্ডিশন বদলে দেয়।

তরঙ্গের মডুলেশন ও তথ্য পুনরুদ্ধার (সংক্ষিপ্ত)

তরঙ্গ শুধু শক্তি বহন করে না — এটাতে তথ্য মোডুলেট করা থাকে। কয়েকটি সাধারণ ডিজিটাল মডুলেশন:

  • ASK/AM (Amplitude Shift Keying): অ্যাম্প্লিটিউড পরিবর্তন করে।
  • FSK/FM (Frequency Shift Keying): ফ্রিকোয়েন্সি পরিবর্তন করে।
  • PSK (Phase Shift Keying): ফেজ পরিবর্তন করে (QPSK, 8PSK ইত্যাদি)।
  • QAM: অ্যাম্প্লিটিউড ও ফেজ—দুইই পরিবর্তিত করে উচ্চতর ডেটা রেট পেতে।

আপনার ফোনে অ্যান্টেনা তরঙ্গকে চয়ন করে সিগন্যালের ওপর ডিকোডিং করে (মডেম/সিগন্যাল প্রসেসিং) — বিলিয়ন-গুলা স্যাম্পলিং, এডভান্সড ফিল্টারিং, ইরর-করেকশন (FEC) ব্যবহার করে বিটগুলো পুনরুদ্ধার করা হয়।

মানব কানে কি গিয়ে পৌঁছায়? — ভৌত আদানপ্রদান

টাওয়ার থেকে কানে সরাসরি 'শব্দ' যায় না — এটি রেডিও তরঙ্গ যা ফোনের অ্যান্টেনায় ধরা পরে, ফোনটি সেগুলোকে ইলেকট্রনিক সিগনালে রূপান্তর করে এবং ফোনের স্পীকার/ইয়ারপিস থেকে শব্দ তৈরি করে। তাই মনস্থ করার বিষয় হল: কানে পৌঁছানো হচ্ছে ফোনের তৈরি শব্দ, রেডিও তরঙ্গ নিজেই সরাসরি কানে শব্দ হিসেবে পৌঁছায় না।

তবুও, অনেকেই প্রশ্ন করেন — "টাওয়ারের তরঙ্গ কি কানে সরাসরি ক্ষতি করে?" — বিজ্ঞানভিত্তিক গবেষণায় বলা হয়েছে যে সাধারণ মোবাইল অপারেটিং স্তরে (নিয়ন্ত্রিত শক্তি) সরাসরি ক্ষতিকারক তাপজনিত প্রভাব দেখা যায় না। তবে SAR (Specific Absorption Rate) লিমিট রয়েছে, যার মাধ্যমে ফোন নির্মাতারা ও অপারেটররা নিরাপত্তা বজায় রাখে।

নিরাপত্তা: SAR, WHO ও বৈজ্ঞানিক ধ্যান-ধারণা

SAR (Specific Absorption Rate): এটি একটি পরিমাপ যা দেখায় মানুষের টিস্যু/দেহ কতটা বৈদ্যুতিক শক্তি শোষণ করছে (ওয়াট/কেজি)। সাধারণ ফোন ও রেডিও স্টেশনগুলো নিয়ন্ত্রিত SAR সীমার আওতায় থাকে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এবং বিভিন্ন নিয়ন্ত্রক সংস্থা (FCC, ICNIRP) দীর্ঘকাল ধরে গবেষণা করেছে; বড় প্রমাণভিত্তি দেখায় যে নিয়ন্ত্রিত রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি এক্সপোজার স্বল্প-মেয়াদে তাপীয় ক্ষতি ছাড়া বড় স্বাস্থ্যঝুঁকি সৃষ্টি করে না। কিন্তু গবেষণা চলমান এবং দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব নিয়ে নিরন্তর পর্যবেক্ষণ রয়েছে।

অনুগ্রহ করে মনে রাখবেন: যারা উচ্চ শক্তির ট্রান্সমিশন (উদাহরণ: উচ্চ-পাওয়ার রেডিও-রিলিটেড কাজ) করে তাদের জন্য প্রটেকশন গাইডলাইন আলাদা। সাধারণ মোবাইল ব্যবহারকারী ও পাসিং পাবলিকের জন্য নিয়ন্ত্রক সীমা যথেষ্ট সেফ বলে ধরা হয়।

প্রায়শই ওঠে এমন মিথ ও বাস্তবতা

  • মিথ: টাওয়ার থেকে আসা তড়ঙ্গ সরাসরি কানে আঘাত বা শুনতে সমস্যা করে। বাস্তবতা: বৈজ্ঞানিক প্রমাণ এই নীতিকে সমর্থন করে না; নিয়ন্ত্রিত স্তরে তাত্ত্বিক তাপ-প্রভাবই মেয়াদী চিন্তা।
  • মিথ: আমার ফোনের পাশে থাকলে টাওয়ারের তরঙ্গ সোজা কানে গিয়ে ক্ষতি করবে। বাস্তবতা: আপনার ফোন থেকে যে শক্তি নির্গত হয় সেটাই প্রায়শই আপনার শরীরের কাছাকাছি থাকে; কিন্তু ফোন ও টাওয়ার উভয়ের এক্সপোজার নিয়ন্ত্রিত।

প্রয়োগযোগ্য উদাহরণ ও ক্যালকুলেশন (সহজ ও ব্যবহারিক)

চলুন একটি ব্যবহারিক সমস্যা দেখে নেই — একটি টাওয়ার 1 কিলোমিটার দূরে এবং 1800 MHz ব্যান্ডে কাজ করছে। ট্রান্সমিশন পাওয়ার 20 W (দ্রষ্টব্য: অপারেটরিক্যাল প্রকৃত পাওয়ার সাধারণত অনেকটাই নিয়ন্ত্রিত ও বিভিন্নভাবে বিভক্ত)। আমরা কেবল ধারণাগত হিসাব করব (ভারী সরলীকরণ সহ):

  1. ফ্রি-স্পেস পাথ-লস: FSPL(dB) ≈ 20·log10(d) + 20·log10(f) + 32.44 এখানে d=1 km, f=1800 MHz → FSPL ≈ 20·log10(1) + 20·log10(1800) + 32.44 ≈ 0 + 20·(3.255) + 32.44 ≈ 65.35 + 32.44 ≈ 97.79 dB।
  2. টাওয়ার পাওয়ার 20 W ≈ 43 dBm (প্রায়)। 43 dBm − 97.79 dB ≈ −54.79 dBm — অর্থাৎ গ্রহণকারী অ্যান্টেনায় আনুমানিক পাওয়ার। এটি মোবাইলের দৃষ্টিতে নিশ্চিত যথেষ্ট শক্তি হতে পারে (ডিপেন্ড করে অ্যান্টেনা গেইন ও নেটওয়ার্ক কন্ডিশনের ওপর)।
  3. এখানে লক্ষণীয় বিষয়: বাস্তব পরিবেশে আরও কয়েক ধরণের লস থাকবে (shadowing, multipath fading, building penetration), তাই বাস্তবে অপারেটররা সেল প্ল্যানিং করে টাওয়ারের সংখ্যা ও শক্তি নির্ধারণ করে যাতে কভারেজ ও ক্যাপাসিটি বজায় থাকে।

উপরের ক্যালকুলেশনটি শিক্ষামূলক; বাস্তবে পেশাদার রেডিও-ইঞ্জিনিয়াররা আরো জটিল মজুদ-মডেল (Hata model, COST231, ITU models ইত্যাদি) ব্যবহার করে পরিকল্পনা করে।

ব্যবহারিক টেক-টিপস

আপনি যদি মোবাইল নেটওয়ার্ক বা নিজের ফোন থেকে নিরাপদ থাকতেই চান, কয়েকটি বেসিক টিপস:

  • ফোন ব্যবহার কমান যখন নেটওয়ার্ক সিগন্যাল দুর্বল — ফোন তখন স্বয়ংক্রিয়ভাবে বেশি শক্তি ব্যবহার করে সংকেত ধরে রাখে।
  • Hands-free বা স্পিকার ব্যবহার করুন যাতে ফোন সরাসরি কানের কাছে না থাকে।
  • রাত্রে ঘুমানোর সময় ফোনটি মাথার কাছে ছেড়ে না রাখাই ভালো (শূন্য-করনের পদ্ধতি, airplane mode ইত্যাদি ব্যবহার করা যায়)।
  • নিয়ন্ত্রক রুলস/Guidelines দেখুন — আপনার দেশ বা অঞ্চলের টেলিকম নিয়ন্ত্রক সংস্থার প্রকাশিত সীমা সম্পর্কে নিজের সচেতনতা থাকুক।

শিক্ষাগত সারাংশ — কী শিখলাম?

সংক্ষেপে:

  • টাওয়ার থেকে তরঙ্গ আসা একটি ইলেকট্রোম্যাগনেটিক প্রক্রিয়া — সরাসরি শব্দ নয়; ফোন এগুলোকে ডিকোড করে শব্দ তৈরি করে।
  • তরঙ্গের মৌলিক সমীকরণ: χ(x,t)=A·sin(ωt−kx+φ) — এখানে অ্যাম্প্লিটিউড, ফ্রিকোয়েন্সি, ফেজ ও তরঙ্গদৈর্ঘ্য মূল ভূমিকা রাখে।
  • দূরত্ব বাড়ার সাথে সাথে শক্তি কমে — FSPL ও অন্যান্য মডেল ব্যবহার করে কভারেজ নির্ণয় করা হয়।
  • নিরাপত্তা সম্পর্কে নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও বৈজ্ঞানিক গবেষণা সচেতন পথে নির্দেশনা দেয়; সাধারণ মোবাইল ব্যবহারকারীর জন্য নিয়ন্ত্রিত এক্সপোজার আংশিকভাবে নিরাপদ হিসেবে গৃহীত।

আরও পড়ার উৎস (সামান্য নির্দেশনা)

পড়ুন:

  • RF propagation মডেল সংক্রান্ত পেপার (Hata model, COST231)
  • WHO বা স্থানীয় স্বাস্থ্য সংস্থার রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি গাইডলাইনস
  • বেসিক টেলিকম পড়াশোনা: মডুলেশন (QAM, OFDM), অ্যাক্সেস টেকনোলজি (GSM, UMTS, LTE, 5G)

পোস্টের শেষ কথা ও কনট্যাক্ট

এই পোস্টটি একটি শিক্ষামূলক আর বিশ্লেষণাত্মক রচনা — যদি আপনি চান তাহলে আমরা এই বিষয়ে একটি বিস্তারিত ভিডিও-স্ক্রিপ্ট বা পাওয়ারপয়েন্ট স্লাইড বানিয়ে দিলেও দেবো যা কোচিং/ক্লাসে দেখাতে পারবেন। মন্তব্যে জানাবেন — কি কভার করতে চান (গাণিতিক ডেরিভেশন, RF মডেল, বা অ্যাডভান্সড অ্যান্টেনা থিওরি)।

কমেন্ট করুন— আপনার প্রশ্ন বা অনুরোধ এখানে লিখুন; আমরা Mathologys-এ চেষ্টা করব পরবর্তী পোস্টে সেটি কভার করতে।

© Mathologys — শিক্ষামূলক সামগ্রী। এই নিবন্ধের উদ্দেশ্য শিক্ষাই; এটি কোনো চিকিৎসা বা আইনি পরামর্শ নয়। যদি আপনি বিশেষ স্বাস্থ্য-সংক্রান্ত উদ্বেগ পান, আপনার স্থানীয় স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।


লেখক পরিচিতি:

আরিফিন আকাশ
প্রভাষক(গণিত)
Mathcheap ও Mathologys এর স্বত্বাধিকারী
গণিত, বিজ্ঞান, ও প্রযুক্তি বিষয়ক লেখক।
ওয়েবসাইট: www.mathcheap.com এবং www.mathologys.com
Facebook: facebook.com/mathcheap

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন